আজও ভালোবাসি তোমাকে
আচ্ছা আমি যদি মরে যাই তুমি কি আরেকটা বিয়ে করবে? চেয়ার থেকে উঠে পরে জানালার কাছে গিয়ে হু হু করে কেঁদে দেয় বাপ্পি । এই প্রথম ছেলেটাকে কাঁদতে দেখলো ইসরাত। ছেলেটা অনেক কঠিন। ইসরাতের মনে পরে যায় তাদের ব্রেক আপের কথা। ঐ দিনও ছেলেটা একটুও কাঁদেনি। আজকেও ছেলেটা সাদা শার্ট পরে আছে। ওই দিনও সাদা শার্ট পরা ছিল। ছেলেটাকে সাদা শার্ট পরলে অনেক সুন্দর লাগে। কিন্তু ছেলেটা কখনোই বুঝতে চায় নি। সেদিন ছিল দুপুরবেলা। দুর থেকে ছেলেটাকে দেখা যাচ্ছিল -হাই বাপ্পি -প্রায় একচল্লিশ মিনিট লেইট করে আসছো। -সরি একটা কাজে আটকে গিয়েছিলাম -কি এমন কাজ যে এত দেরি -তোমাকে বলবো কেনো? এটা টপ সিক্রেট -আচ্ছা জানলাম না। হঠাৎ ডাকলে যে? -খুব ইম্পর্টেন্ট একটা জিনিশ আলোচনা করবো -কি? -আমি আর এই রিলেশন রাখবো নাহ। -ও আচ্ছা। আর কিছু? -আমি মজা করছি নাহ। আমি সিরিয়াস। -আচ্ছা। আমি জোর করছি না তোহ তোমাকে। -তোমার খারাপ লাগবে নাহ? -হুম লাগবে -থাকতে পারবে আমাকে ছাড়া? -পারবো।কিন্তু কষ্ট হবে -কতটুকু ভালোবাস আমাকে? -কি জানি -আমি চলে যাই ভালো লাগছে নাহ -আর কিছুক্ষণ থাকো। -কেনো -তোমাকে ফুচকা খাওয়াই। আর তো খাওয়াতে পারবো নাহ। ডুকরে কেঁদে দেয় ইসরাত। একসাথে বসে ফুচকা খায় ওরা। যাওয়ার বেলায় খুব কাঁদে মেয়েটা। জড়িয়ে ধরে কাঁদে। অথচ ছেলেটার মুখে হাসি ছিল। চোখেও কষ্টের চিহ্ন পায়নি মেয়েটা। একমাস পরেই ছেলেটা হঠাৎ করে মেয়েটার বাসার নিচে গিয়ে ফোন দেয়। -হ্যালো ইসরাত -এতদিন পর হঠাৎ ফোন দিলে? -আমাকে আধা ঘন্টা সময় দিতে পারবে? -হুম পারবো। কিন্তু কি কাজ? -একটু তৈরি হয়ে নিচে নেমে আসো। -আচ্ছা আসছি। মেয়েটাকে অবাক করে দিয়ে কাজি অফিসে নিয়ে বিয়ে করে ফেলে বাপ্পি। মেয়েটাও কবুল বলে। অথচ একটি বার জিজ্ঞাসা করে না ছেলেটিকে। ইসরাতের একটা ছোট বোন আছে। ব্রেক আপের কিছুদিন পর হঠাৎ বাপ্পিকে ফোন দেয় ছোট বোনটা। -হ্যালো বাপ্পি ভাইয়া? -হুম বলো কি হয়েছে -আপু হসপিটালে একটু তারাতারি আসেন। হসপিটালে গিয়েও ইসরাতের সাথে দেখা করে নাহ বাপ্পি। ডাক্তারের সাথে কথা বলে চুপটি করে চলে আসে। ছেলেটা ব্রেক আপের কারন জানতে পায়। এরপর এসেই হুটহাট বিয়ে। জোরে শব্দ করে কেশে উঠে ইসরাত। জানালার সামনে থেকে চোখ মুছে বাপ্পি ৷ আবার ফিরে যায় ইসারতের কাছে। -পানি খাবে? -নাহ। -শরীর অনেক খারাপ লাগছে? -নাহ। তুমি আছো নাহ। খারাপ লাগবে কেনো -পাগলামি করো নাতো -জানো তুমি যখন পাগলি বলে ডাকো আমার শুনতে অনেক ভালো লাগে -এই পাগলি আবার পাগলামি করছো -তোমাকে অনেক মিস করবো -কিচ্ছু হবে না তোমার -হাহাহাহ তাই নাকি -হাসবে না তোহ। কষ্ট হচ্ছে -আমাকে অনেক ভালোবাস তাই না? -নাহ। মোটেও ভালোবাসি নাহ -এত মিথ্যে বলো কেন -তুমি প্লিজ কথা বইলো নাহ। শরীর আরো খারাপ লাগবে -একটা অনুরোধ করি রাখবে? -কি? -আমাকে একটু বিয়ের শাড়িটা পরিয়ে দিবে -হঠাৎ বিয়ের শাড়ি কেনো -প্রশ্ন করো নাহ। পরিয়ে দাও বাপ্পি বিয়ের শাড়িটা পরিয়ে দেয় ইসরাতকে। মেয়েটা খালি হাসতে থাকে। -এই চোখ বন্ধ করে আছো কেনো? চোখ বন্ধ রাখলে শাড়ি পড়াবা কিভাবে? আরে আমি তো তোমার বউ লজ্জা কিসের -দেখো এইসব কথা বলবা নাহ। ভালো লাগছে নাহ। -হাহাহাহা। আচ্ছা শোনো শাড়ি পরিয়ে তুমি আমার কপালে একটা চুমু দিবে ঠিক আছে? ছেলেটা আর কথা বলে নাহ। শাড়ি পড়ানো শেষ হলে আবার শুয়িয়ে দেয়ে মেয়েটাকে। -এই চুমু দাও না কেনো -পারবো নাহ -প্লিজ ছেলেটা মেয়েটার কপালে চুমু দেয়। কপালে চোখের দু ফোটা পানি পরে -এই বোকা কাঁদছ কেনো -ইসরাত আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যেও না। ছেলেটা জড়িয়ে ধরে মেয়েটাকে। মেয়েটাও জড়িয়ে ধরে বলে, -আমিও তোমাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি আর কোনো কথা শোনা যায় নাহ। ছেলেটার অবিরাম কান্নার আওয়াজ আসছে শুধু। মূহুর্তটা অনেক কঠিন হয়ে গিয়েছে। অনেক কঠিন. ছেলেটির আজও চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে ইসরাত এখনো অনেক ভালোবাসি তুমায় আমি.... ......collected....
No comments: