ছলনাময়ী ভালবাসা
সাকিব ও সুইটির আ্যরেঞ্জ ম্যারেজ
হয়েছে কিন্তু তবুও তাদের মধ্যে
ভালবাসার কোন কমতি ছিল না।
তাদের যখন বিয়ে হয় তখন সাকিব
একটা প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরী
করতো আর সুইটি ঢাকা
ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা
করতো। সুইটির ইচ্ছে ছিল যে
পড়াশুনো করে ভাল একটা
চাকরী করবে তাই সাকিব তার
ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেয় এবং
তাকে পড়ালেখা করতে কোন
বাধা দেয় নি।
দেখতে দেখতে সুইটির ফাইনাল
পরীক্ষা চলে আসলো।
সুইটি পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে
বইটা আরেকবার রিভিশন
দিচ্ছিল তখন সাকিব তাকে নিজ
হাতে খাইয়ে দেয়।যাতে সে আরেকটু
পড়তে পাড়ে। তারপর সুইটি পড়তেছিল
আর সাকিব নাস্তা খাচ্ছিল কারন
সে আর সুইটি একসজ্ঞে বের হবে।
আর সুইটিকে কলেজে নামিয়ে দিয়ে
সাকিব অফিসে যাবে।তারপর
তারা দুজনে বের হয় এবং রিক্সায়
করে তাদের গন্তব্যের দিকে রওনা
দেয়।সুইটিকে কলেজে নামিয়ে
দেওয়ার সময় সাকিব সুইটির
কপালে একটা চুমু দেয় আর
বলে
সাকিব: ভালো করে পরীক্ষা দিও।
.............
তারপর সুইটি পরীক্ষা দেওয়ার
জন্য কলেজের গেট দিয়ে
ভিতরে চলে যায়।আর সাকিব
তার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে
থাকে যতক্ষণ না সুইটি তার
চোখের আড়াল হয়।তারপর সাকিব
অফিসের দিকে রওনা দেয়।
আর অন্যদিকে সুইটি পরীক্ষা
দেওয়ার জন্য পরীক্ষার হলে প্রবেশ
করে।সাকিব অফিসে বসে কাজ
করছিল আর এমন সময় হঠাৎ
করে তার মনে হয় আজকে সাফাকে
নিয়ে ঘুরতে যাবে তার পরীক্ষার
পড়।তাই আজকে অফিস থেকে একটু তাড়াতাড়ি যেতে হবে তাই সে বসের
কাছে যায় এবং বলে....
সাকিব: মে আই কাম ইন স্যার?
বস: ইয়েস কাম ইন. আরে সাকিব
সাহেব যে বলুন কি বলবেন।
সাকিব: আসলে স্যার আজকে একটু
তাড়াতাড়ি যেতে হবে স্যার।
বস: আচ্ছা ঠিক আছে আপনার
যখন ইচ্ছা তখন চলে যেতে পারেন
কোন সমস্যা নেই।
সাকিব: ধন্যবাদ স্যার।
বস: হুম ঠিক আছে।
তারপর সাকিব তার বস এর রুম থেকে
বের হয়ে তার হাতের কাজগুলো
শেষ করতে থাকে।
.........
আর অন্যদিকে সুইটি পরীক্ষার
রুমে বসে টেনশন করতে থাকে
যে প্রশ্ন কমন পড়বে কিনা।
কিন্তু যখন পরীক্ষার প্রশ্ন
পায় তখন সে নিশ্চিত হয়।
কারন প্রশ্ন বেশিরভাগ তার কমন
সে পরীক্ষা শেষ করে বাইরে
বেরিয়ে সাকিবকে কল দেয়।
সাকিব ডেস্কে বসে কাজ করছে
এমন সময় তার ফোনটা বেজে
উঠে দেখে সুইটি ফোন দিয়েছে।
ফোনটা রিভিস করে জিজ্ঞেস করে
সাকিব: তোমার পরীক্ষা কেমন
হয়েছে?
সুইটি: ভাল।
সাকিব: আচ্ছা তুমি দাঁড়াও আমি
আসছি।
সুইটি: ঠিক আছে।বায়
সাকিব: বায়।
সাকিব ফোনটা কেটে দিয়ে বাইরে বের
হয় এবং একটা রিক্সা নিয়ে সুইটির
কলেজের দিকে যেতে থাকে।
সাকিব লক্ষ্য করল যে কলেজের
সামনে সুইটি দারিয়ে সাকিব দেখা
মাএই সুইটি তার রিক্সার দিকে
এগিয়ে যায় এবং রিক্সায় উঠে।
সাকিব তাকে নিয়ে পার্কে যায়
সেখানে তারা বাদাম ফুসকা,
আইসক্রিম ইত্যাদি খায়।
এবং সবশেষে সুইটিকে নিয়ে
একটা ভাল রেস্টুরেন্টে যায়
সেখানে তারা রাতের ডিনার করে।
সেখান থেকে তারা বের হয়ে
সোজা বাসায় চলে যায়।ফ্রেস হয়ে
দুজনেই ঘুমিয়ে পড়ে কারন তারা
দুজনেই অনেক ক্লান্ত ছিল।
এভাবেই দেখতে দেখতে একটি
দুটি করে সুইটির সমস্ত পরীক্ষাগুলো
শেষ হয়ে যায়।
...........
এভাবেই তাদের দুষ্ট মিষ্টি ভালবসার
সংসার চলতে থাকে। তাদের মাঝে
ভালবাসার কোন কমতি এর মাঝে
দেখতে দেখতে
সুইটির রেজাল্ট এর সময় ঘনিয়ে
আসে।আর রেজাল্ট এর সময় যত
ঘনিয়ে আসে সুইটির টেনশন ততো
বাড়তে থাকে।
.....
রেজাল্ট এর আগের দিন
রাতে যখন সুইটি সাকিবের
বুকেমাথা দিয়ে শুয়ে ছিল
তখনসুইটি সাকিবকে জিজ্ঞেস
করে
সুইটি: জানো সাকিব আমার
না রেজাল্ট নিয়ে খুব টেনশন
হচ্ছে।
সাকিব: এই পাগলি এত টেনশন
এর কিছু নেই আর ইনশাআল্লাহ
তোমার রেজাল্ট ভালোই হবে
এটা আমার বিশ্বাস।
সুইটি আর কিছু না বলে সাকিব
এর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
সাকিব খেয়াল করল এম সময়
সুইটিকে দেখতে খুব মায়াবী
লাগছে।তাই সাকিব সুইটির কপালে
একটা ভালবাসার পরশ একে দেয়।
সাকিবের উষ্ণ ঠোঁটের ছোয়া পেয়ে
সুইটি চোখ বন্ধ করে ফেলেছে।
আর সুইটির চোখের পাতাজোরা
পিটপিট করে কাপছে।এমন
আবস্থায় সাকিব আবার সুইটির
প্রেমে পড়ে যায়।
.........
রেজাল্ট এর দিন সকালে সুইটি
তার রেজাল্ট নিয়ে দুশ্চিন্তা করছে
কিন্তু সাকিব তাকে টেনশন করতে
বারন করে।তখন সুইটিকে সাকিব
বললো....
সাকিব: তুমি কোন টেনশন করো
না।আর আমি তোমার রেজাল্ট
অফিস থেকে ফেরার সময় নিয়ে
আসবো।
এই বলে সাকিব অফিসের জন্য
বেরিয়ে পড়ে।এদিকে সুইটি তার
রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা করতে থাকে।
সাকিব সুইটির রেজাল্ট জানার
জন্য যখন এর কলেজে গেল
জানতে পাড়লো সুইটি ফাস্ট ক্লাস
পেয়েছে।খুশিতে সাকিব আত্নহারা
হয়ে পড়ে সে বাসায় ফেরার সময়
ভাল মিষ্টি নিয়ে আসে।বাসার দরজার
সামনে দাঁড়িয়ে ভাবতে থাকে সুইটিকে
সারপ্রাইজ দিবে তাই সে মুখের ভজ্ঞিটা
চেঞ্জ করে গোমড়া করে ফেলে।
কলিং বেলে চাপ দিতেই দরজা খুলে
যায়।সাকিবকে দেখা মাএই সুইটি তার
রেজাল্টের কথা জিজ্ঞেস করে।
সুইটি: সাকিব আমার রেজাল্ট
পেয়েছো?
সাকিব কিছু না বলে বাসার ভিতর
প্রবেশ করে। সুইটি আবার রেজাল্টের
কথা জিজ্ঞেস করতেই
সুইটি: কি হল সাকিব কথা বলছো না
কেন?
সাকিব: আসলে সুইটি তুমি একটা
সাবজেক্টে ফেল করেছো।
সুইটি এই কথা শোনা মাএই ধপ করে
সোফার উপর বসে কান্না শুরু করে
দেয়।এ অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে
পেট ফেটে যাওয়ার উপক্রম।তখন
সাকিব সুইটিকে জড়িয়ে ধরে কপালে
চুমু দিয়ে বলে....
সাকিব: এই বোকা মেয়ে কাঁদছো
কেন তুমি তো ফাস্ট ক্লাস পেয়েছে
এটা শুনে খুশিতে সুইটির মুখে হাসি
ফুটে উঠে।সাকিব সুইটিকে মিষ্টি খাইয়ে
দেয়।রাতে খাবার খেয়ে যখন তারা
শুয়েছিল তখন সুইটি সাকিবকে বলে
সুইটি: সাকিব তোমাকে একটা কথা
বলবো।
সাকিব: হুম বলো।
সুইটি: সাকিব আমি না চাকরি করতে
চাই তুমি কি বল।
সাকিব: আমি তোমাকে তোমার কোন
কাজে কখনো বাধা দেই নি আজকেও
দেবো না।
সুইটি খুশিতে আত্নহারা হয়ে পড়ে কারন
তার এতোদিনের সপ্ন পুরন হতে চলেছে।
পরেরদিন সুইটি একটা ইন্টারর্ভিউ দিতে
যায়।রাতে বাসায় ফিরে সাকিব তাকে
জিজ্ঞেস করে
সাকিব: তোমার ইন্টারর্ভিউ কেমন হলো?
সুইটি: ভালই।
পরেরদিন সুইটির কাছে একটা আননোন
নাম্বার থেকে ফোন আসে ফোনটা রিসিভ
করে...
সুইটি: হ্যালো।
অপরিচিত: আপনি সুইটি বলছেন।
সুইটি: হা বলছি।আপনি কে বলছেন?
অপরিচিত: আপনি একটা ইন্টারর্ভিউ
দিয়েছিলেন আমাদের অফিসে। আপনি
এই পদের জন্য সিলেক্ট হয়েছেন।আর
আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের
অফিসে জয়েন করুন।
সুইটি: আচ্ছা ঠিক আছে।
সুইটি খুশিতে আত্নহারা হয়ে পড়ে।
রাতে সাকিব বাসায় আসতেই সুইটি
সাকিবকে জড়িয়ে ধরে।সুইটির এমন
আচরণ দেখে সাকিব জিজ্ঞেস করে
সাকিব:কি ব্যাপার আজ এতো খুশী
খুশী লাগছে কেন তোমাকে।
সুইটি: আমার এতোদিনের সপ্ন পুরণ
হয়েছে।আমার চাকরী টা হয়ে গেছে।
সাকিব: বাহ এটা তো খুশির খবর।
সুইটি: হুম।
পরেরদিন সাকিব সুইটি দুজনে
একসজ্ঞে অফিসের উদ্দেশ্য বের হয়।
আগে সাকিবের অফিস তারপর সুইটির
অফিস।সুইটি অফিসে প্রথম দিন সবার
সাথে পরিচিত হয়।সাকিব সুইটিকে
ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করে ঠিক মত
পৌছাছে কিনা।
অন্যদিকে বস সুইটিকে প্রথম দেখায়
পছন্দ করে ফেলে।তাই বস নানা বাহানায়
সুইটির সাথে কথা বলে।সুইটি বুঝতে পাড়ে
যে বস তাকে পছন্দ করে।সুইটিও বসকে
পছন্দ করতে শুরু করে।প্রথম প্রথম সুইটি
সাকিবের জন্য রিক্সা নিয়ে অপেক্ষা করতো
কিন্তু এখন আর অপেক্ষা করে না।কারন সে
বসের সাথে প্রেম করতে ব্যাস্ত।তাই বাসায়
ফিরতে রাত হয় সাকিব জিজ্ঞেস করলেই
বলে অফিসে অনেক কাজের চাপ।
আর বসের সজ্ঞে যখন কথা বলে তখন
সাকিব ফোন দিলে কেটে দেয়।বস জিজ্ঞেস
করলে বলে আননোন নাম্বার।আর সাকিব
জিজ্ঞেস করলে বলে।ইম্পরট্যান্ট মিটিং ছিল।
আর সুইটি অনেক রাতে কার সাথে
যেন কথা বলছে জিজ্ঞেস করলেই বলে
কলিগ এর ফোন ফ্রেন্ড এর ফোন ইত্যাদি।
আর সাকিব রাতে তার জন্য খাবার বেরে অপেক্ষা করলে বলে সাকিব এইসব
আদিক্ষেতা আর ভাল লাগে না।কালকে
থেকে আর খাবার নিয়ে অপেক্ষা করবে
না।কারন সে বসের সাথে ডিনার করে
এসেছে।একদিন সাকিব জানালা দিয়ে
রাস্তার দিকে তাকিয়ে ছিল দেখে সুইটি
একটা গাড়ির ভেতর বের হচ্ছে আর কাকে
যেন কিস দিল একটা।এটা দেখে সাকিবের
হ্রদয়ে যেন কেউ ছিরে নিয়ে যাচ্ছে এমন
মনে হচ্ছে।তবুও সাকিব সুইটিকে কিছু
বলে না। কারন সাকিব সুইটিকে নিজের
থেকেও বেশি ভালবাসে।রাতে যখন সাকিব
সুইটি শুয়ে ছিল তখন সাকিব সুইটিকে
পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে আর বলে
সাকিব: সুইটি আমাদের এখন একটা বেবি
নেয়া দরকার।
সুইটি: আমি সারাদিন কাজ করতে করতে
ক্লান্ত।এইসব ফালতু বিষয় নিয়ে এখন কথা
বলতে চাচ্ছি না।আমি এখন ঘুমাবো।
সাকিব সুইটিকে ছেড়ে দিয়ে ভাবতে থাকে
এই কি সেই সুইটি যে তাকে পাগলের মত
ভালোবাসতো। তারা দুজনে শুয়ে আছে পাশাপাশি। তাদের শরীর কত কাছাকাছি
অথচ মন দুরত্ব কত বেশি।এ কথা ভাবতে ভাবতে সাকিব ঘুমিয়ে পড়ে।সকালবেলা ঘুম
থেকে উঠে দেখে সুইটি তার পাশে নেই।
সারাবাড়ি খুজেও যখন পেল না তখন বুঝতে
পারলো সে অফিসে চলে গেছে।
সাকিব হঠাৎ অসুস্থ বোধ করে।তাই
অফিস থেকে ছুটি নিয়ে ডাক্তার দেখাতে
যায়।ডাক্তার তাকে কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা
করতে বলে তাকে।তাই সে সব পরীক্ষা
নিরিক্ষা করে রিপোর্ট গুলো ডাক্তারের
কাছে নিয়ে যায়।
ডাক্তার রিপোর্ট দেখে চমকে উঠে...
ডাক্তার: আপনার সাথে আপনার
পরিবারের কেউ আসে নি।
সাকিব: না।
ডাক্তার: কথাটা আপনাকে কিভাবে যে
বলি।
সাকিব: আরে বলেন না সমস্যা নেই।
ডাক্তার: আসলে আপনার ব্লাড ক্যান্সার
হয়েছে আপনি আর মাএ বেশি হলে ১
সপ্তাহ বাচবেন।
সাকিব: আমি একটু আসছি।
সে সুইটিকে ফোন দেয়
সাকিব:হ্যালো।
সুইটি:এই কুওার বাচ্চা তোকে কতবার
না বললাম অফিসে থাকাকালীন কোনো
ফোন দিবি না।রাখ বায়।
সাকিব আর কিছু না বলে ফোনটা
কেটে দিয়ে কাদতে থাকে।অন্যদিকে
সুইটিকে নিয়ে বস কক্সবাজার ঘুরতে
যাবার প্লান করে।
সাকিব হসপিটালের বাইরে গিয়ে এক
প্যাকেট মিষ্টি কিনে নিয়ে ডাক্তার কে
দেয় আর বলে
সাকিব: আপনি নিজেও জানেন
না আপনি আমাকে কি খুশীর খবর দিলেন
আমার এই খুশির দিনে আপনারা এই
মিষ্টিগুলো দিয়ে মিষ্টি মুখ কইরেন।
এইবলে সাকিব একটা হাসি দিয়ে চলে যায়
আর ডাক্তার বসে বসে ভাবতে থাকে নিশ্চত
ওর মাথায় গণ্ডগোল আছে না হলে কেউ
নিজের মৃতুৃ্্যর খবর শুনে খুশি হয়।
সাফা সবকিছু গোছগাছ করার জন্য
তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে দেখে সাকিব
এখনো বাসায় ফেরে নি।তার কাছে বাসার
একস্ট্রা চাবি ছিল সেটা দিয়ে দরজা খুলে
বাসার ভিতর ঢুকে।সে বারান্দায় দারিয়ে
কফি খাচ্ছিল আর বস এর সাথে কথা
বলছিল দেখলো এমন সময় একটা ছায়া
দেখা যাচ্ছে।ছায়াটা খুব চেনা এটা সাকিবের
ছায়া।কিছুক্ষন পড় কলিং বেজ বেজে উঠলো
সে দরজা খুলে দিল। সাকিব বাসার ভিতর ঢুকল এমন সময় সুইটি বলে উঠলো...
সুইটি: আমি কাল অফিসিয়াল কাজে ১ সপ্তাহ
এর জন্য কক্সবাজার যাচ্ছি।
সাকিব কিছু না বলে ফ্রেস হতে চলে গেল।
সকালবেলা সাকিব ঘুম থেকে উঠে দেখে সাফা চলে গেছে।সাকিব কাশি দিল দেখলো
তার কাশির সাথে রক্ত বের হচ্ছে।সাকিব বুঝলো তার সময় শেষ প্রান্তে এসে গেছে।
অন্যদিকে সুইটি কক্সবাজার এ তার বসের
সাথে হোটলের এক রুমে থাকছে।এর মধ্যে
তাদের বেশ কয়েকবার শারিরিক সমর্পক
হয়েছে যেখানে সাকিব আর তার বিয়ের ৫
বছরে সাকিব তার সাথে জোড় করেও
কোনোদিন শারারিক সমর্পক করে নি।
তারা প্রায় ১০ দিন অইখানে ছিল এই সময়ের
মধ্যে তার একবারো সাকিবের কথা মনে পড়ে নি।কিন্তু কক্সবাজার থেকে ফিরে এসে সে
তার বসের সজ্ঞে যেতে যাইলে বস তাকে
চাকরী থেকে বের করে দেয়।আর বলে তার
সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার ভিডিও
ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে।সুইটি কাঁদতে
কাঁদতে চলে আসে অইখান থেকে বাসায়
এসে দেখে বাসায় তালা দেয়া সে ভাবলো
সাকিব হয়তো অফিসে গেছে।রাত হয়ে
গেছে।সাকিবের জন্য অপেক্ষা করতে
করতে ঘুমিয়ে পড়ে।সে ঘুম থেকে উঠে দেখে
সাকিব এখনো ফেরে নি।সাকিবকে ফোন
দেয়।ফোন বারবার বন্ধ আসছে।তাই সে তাকে খুঁজতে বের হয় খুঁজতে খুঁজতে একজন
দোকানদার তার ছবি দেখে চিনে ফেলে
আর বলে।
দোকানদার: আফামনি এই লোকটা ৭-৮ দিন
আগে মারা গেছে।৭-৮ দিন আগে এই লোকটা
হঠাৎ করে রাস্তাত অজ্ঞান হয়ে যায়।আমরা
হাসপাতালে নিলে কয় লোকটা মারা গেছে।
আর লোকটার সাথে মোবাইল মানিব্যাগ
কিছুই আছিল না।তাই আমরা লোকটারে
কবর দিয়া দিছি।
সুইটি মাথায় যেন আকাশ ভেজ্ঞে পড়লো।
তার মনে পড়লো যে যেদিন লাস্ট সাকিবের
সাথে তার দেখা হয়েছিল সেদিন সাকিবের
হাতে কিসের যেন একটা ফাইল ছিল।আর
তাকে কেমন যেন শুকনো শুকনো লাগছিল।
সজ্ঞে সজ্ঞে সে বাসায় ফিরে গেল।সব কিছু
তন্ন তন্ন করে খুঁজতে খুঁজতে ড্রয়ারে সাকিবের
মোবাইল, মানিব্যাগ,ডায়েরি এবং একটা
ফাইল দেখলো।ফাইলটা খুলে দেখলো তাতে
সাকিবের ব্লাড ক্যান্সারের রিপোর্ট। ডায়েরি
খুলে পড়তে শুরু করলো সেখানে সাকিব
তারিখ দিয়ে তাদের সমস্ত স্মৃতির কথা লেখা।
জানো আজকে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি
কারন এই খুশির খবরটা জানাতে
তুমি যখন রাতের পর রাত জেগে অন্য
একটা লোকের সাথে ফোনে কথা বলতে
হাসাহাসি করতে তখন আমার খুব কান্না
পেত। আর ভাবতাম এই কি সেই সুইটি
যে আমার বুকে মাথা না রেখে ঘুমাতে
পাড়ত না।এই কি সেই সুইটি যে আমাকে
না দেখতে পেলে অস্থির হয়ে উঠত।
আসলে কথাটা ঠিক যে মানুষ সময়ের
সাথে বদলে যায়।যেমন তুমিও গেলে।
আমার একা একা খুব খারাপ লাগতো
কান্না পেত।কিন্তু পুরুষ মানুষের যে কান্না
মানায় না।তাদের শত আঘাত সহ্য করেও
হলেই হাসিখুশি থাকতে হয়।
তোমাকে যেদিন দেখলাম অন্য একটা
লোকের গাড়ি থেকে নেমে তাকে কিস
দিলে সে দৃশ্য দেখামাত্র মনে হল কেউ
আমার কলিজাটা ছিরে নিয়ে যাচ্ছে।
যখন ফোন করলাম তুমি আমাকে গালি
দিলে।আমাকে গালি দিলেও আমার
খারাপ লাগতো না।খারাপ লাগছে
কারন তুমি আমার মাকে গালি দিলে।
আমি তোমাকে একটা খুশির খবর
জানাবো বলে ফোন দিয়েছিলাম
আর তা হল আমার ব্লাড ক্যান্সার
হয়েছে আর বেশিদিন বাচবো না।আর
তোমাকে জালাতে পারবো না।মানে সাকিব
নামক বোঝাটা তোমার জীবনে আর থাকবে
না।তুমি তো আমার মনটাকে আঘাত দিতে
দিতে মেরেই ফেলেছো।আর এখন শুধু
শরীরটাই বাকি ছিল সেটাও আর বেশিদিন
থাকবে না।আজকে আমি একা একা অনেক
জায়গায় ঘুরেছি।আমার বন্ধুদের সাথে
দেখা করেছি তাদের থেকে মাফ চেয়ে
নিয়েছি।তোমাকে নিয়ে যা যা খেতাম
আজ সব খেয়েছি।সকালে বাথরুম এর
আয়নায় দেখলাম চোখগুলো বসে গেছে
শরীরটাও কেমন যেন হয়ে গিয়েছে।
আমার না এখন খুব কষ্ট হচ্ছে মুখ দিয়ে
রক্ত পরছে মনে হচ্ছে আর বাচবো না।
শেষ ইচ্ছা ছিল তোমার কোলে মাথা
রেখে মরবো, কিন্তু
সে ইচ্ছা তো আর পুরন হবার নয়।আচ্ছা
আমার না একটা কথা জানতে খুব ইচ্ছে
করছে আচ্ছা আমার দোষটা কি ছিল যার
জন্য তুমি আমার সাথে এমন করলে।তোমার
প্রতি আমার কোন রাগ নেই,কোন অভিযোগ
নেই।শুধু আশা করি যেখানেই থাকবে ভাল
থেক।
সমাপ্ত।
সুইটি আর কিছু ভাবতে পারছে না।সে ভাবছে সাকিবের সাথে সে কত অন্যায় করেছে,তার সাথে কত নিকৃষ্ট খারাপ ব্যাবহার করেছে,অকারনে ওকে কত গালমন্দ করেছে।
তবুও সাকিব তাকে কিছু বলে নি।সব মুখ বুঝে সহ্য করে গেছে। সে চিৎকার করে সাকিবকে
বলছে আমাকে মাফ চাওয়ার একটা সুযোগ তুমি
দিলে না।চলে গেলে অভিমান করে। কিন্তু এখন কান্না করে আর কি লাভ
না সাকিব আর শুনতে পাচ্ছে না।
" আমি বলছি না সব মেয়ে এক।"
তবে খুজলে এরমকরম সাকিব সুইটির মত অনেক পাওয়া যাবে।
ভুলএুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।ভাল লাগলে
গল্পটি শেয়ার করবেন।
এত কষ্ট করে গল্প লিখি কিন্তু আপনারা কমেন্ট করেন জানান না যে গল্পটা কেমন হলো।কারন আপনাদের ভাল লাগলেই আমাদের কষ্ট লাঘব হবে।
No comments: